নিজস্ব প্রতিবেদক: “বন্ধুত্বের আহবানে, মিলেছি প্রাণে প্রাণে, প্রাণের উল্লাসে আজি হৃদয় দুয়ার খুলি, এসো বন্ধু সবে হাতে হাত রেখে চলি” এই স্লোগানকে সামনে রেখে দিনব্যাপী নানা আয়োজন ও কৈশোরের স্মৃতিচারণে অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি-৯৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী উৎসব ও আনন্দ ভ্রমণ। ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট স্কুলের শিক্ষার্থী হিসেবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা বন্ধুরা বর্তমানে নানা পেশায় কর্মরত দেশের বিভিন্নস্থানে। পুনর্মিলনীর এই উৎসবে বন্ধুদের সঙ্গে যোগ দিতে (২২ আগষ্ট-২৫ইং) শুক্রবারে এ দিন সকাল ৮টা থেকে স্কুল প্রাঙ্গণে আসা শুরু হয়। ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে কৈশোরের পরিচিত মুখগুলোর সঙ্গে একত্রিত হয় স্কুল প্রাঙ্গণে এর সামনে। আর এটিকে স্মরণীয় করতে ৯৯ ব্যাচ চট্টগ্রাম এয়ারপোর্ট স্কুলের বন্ধুরা আয়োজন করল আনন্দ ভ্রমণ। জলে-জঙ্গলে, চা বাগান, পতেঙ্গা সমুদ্র, পারকী সমুদ্র সৈকত ঘুরে বেড়িয়েছে বন্ধুরা। হাসি ঠাট্টায় মাতোয়ারা তারা। আজ যে নেই কোন বাঁধা, নেই কোন শাসন বারণ। তাইতো তারা ফিরে গেল সেই স্কুল জীবনে। খানিকটা সময় যেন তারা স্বপ্নের বিভোর। খানা-পিনা, গল্প-আড্ডায় সময় পার। কিছু সেলফি আর গ্রুপ ছবি দিয়ে শুরু বন্ধুদের যাত্রা। তিনটি হাইচ গাড়ীতে প্রায় অর্ধশত বন্ধু নিয়ে হাজির সবুজে ঘেরা অভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত ও সিটি গ্রুপের চট্টগ্রামের চাদপুর চা বাগান দৌড়া-দৌড়ি, সেলফিবাজি, আর গানে গানে তাদের সময় কাটে আনন্দে। স্কুল-জীবনের হারিয়ে যাওয়া বাঁধভাঙা বন্ধুত্বের এক একটা পরিচ্ছেদকে আরেকবার ঝালাই করে নেওয়ার সুযোগ মেলে এই আয়োজনে। এসএসসি-৯৯ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন জন নানা পেশায় চলে গেছেন, তাদের মধ্যে রয়েছে ডাক্তার, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যাংকার, সাংবাদিক, কবি, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনীতিবিদ, সামরিক ও বেসামরিক অফিসার, কেউবা আবার শিক্ষক ও ব্যবসায়ী। কেউবা প্রবাসী। কিন্তু পরিচয় সবার যেন এক, সেটা হলো ‘আমরা স্কুল বন্ধু’। ৯৯ ব্যাচের বন্ধু মোঃ হানিফ বলেন, এটাকেই বলে ৯৯ শক্তি। ৯৯ মানেই বন্ধু জন্য বন্ধুর ভালোবাসা। বর্তমানে আমরা অনেকটা যান্ত্রিক জীবন-যাপন করে থাকি। সব-সময় আবেগগুলো চেপে রাখতে রাখতে আমাদের মধ্যে আবেগ প্রায় হারিয়েই যেতে বসেছে। কিন্তু বন্ধুর কল্যাণে আমাদের মধ্যে এখনও মানুষসত্ত্বা বেঁচে আছে। বন্ধুই একমাত্র মানুষ, যার সামনে মন খুলে আমরা আবেগ প্রকাশ করতে পারি। বন্ধু মহিউদ্দিন ও শাহিন, হানিফ বলেন, আজীবন ‘বন্ধুত্ব’ থেকে যায় স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গেই! কারণ ভালোবাসতে শেখা কিংবা স্বপ্নের জাল বোনা শুরু হয় সেই স্কুল থেকেই। শিশু থেকে কিশোর- ছেলেবেলার স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ওই স্কুলবাড়িটাই। ওখান থেকেই প্রথম শেখা বন্ধুত্বের সংজ্ঞা। জীবনের প্রথম বন্ধুও তৈরি হয় সেখানেই। শুক্রবার জুম্মার নামায পরে কর্ণফুলি প্যানেল রেস্টুরেন্ট এ দুপুরের খাবারের আয়োজন করা হয়। এ সময় তারা খাবার টেবিলে প্রাণের আড্ডায় মেতে ওঠেন। নিজেদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। দীর্ঘদিন পর সহপাঠীদেরকে কাছে পেয়ে অনেকে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। এই উচ্ছ্বাস আগামীর দিনগুলোতে আরও বড় আকারে হবে বলে অনেকে আশা প্রকাশ করেন ৯৯ সকল বন্ধুরা। একই রকমের পোশাক স্কুল লোগোকে ঘীরে চিহ্ন ছবি তুলে তার ফেইসবুক ওয়ালে পোস্ট দিয়ে লিখে বন্ধুদের ভালোবাসা। দুপুরে আর খাওয়া-দাওয়া শেষে বন্ধুরা হাজির বিভিন্ন দর্শনীয় স্পটে। সেখানেও বন্ধুদের চলে অবিরাম খোঁজ গল্প আর খেলাধুলা, মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান । ৩৮/৪৩ বছরের যুবকদের অনুভূতি ১৫/১৬ বছরের কিশোরের মত। তাদের বাঁধভাঙ্গা উচ্ছাসটি ছিল হাইস্কুল জীবনের লেইজার প্রিয়ডের সময়টুকু। মাগরিবের আযান পড়ে গেছে বাড়ি ফেরারপালা। বন্ধুদেরকে সব একত্রে করে এই ধরনের একটি সুন্দর অনাবিল পরিবেশে মনোমুগ্ধকর আয়োজনের জন্য বন্ধু হানিফ,মহিউদ্দিন রানা, আলমগীর, শাহীন’ সাইফূল, হারুন,ফোরকান, ফরিদুল ইসলাম, আলী আকবর, মোঃ মাহফুজ, সাইফুল ইসলাম’সহ প্যানেলের সকল বন্ধুদের ধন্যবাদ জানানো হয়। সুন্দর আয়োজনের মাধ্যমে ক্ষনিকের জন্য স্বপ্নের রাজ্যে হারিয়ে দিতে সহায়তা করায় আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান বন্ধু উপস্থিত সকল বন্ধুরা।